নজরুলের মত বলতে পারিনা
’হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছ মহান।’
কারন-দারিদ্রতায় আজ মোরা,
চোর, ডাকাত, খুনি,
হাইজ্যাকার, ভিক্ষুক অথবা পতিতা।
সুকান্তের মত ভাবি,
পূর্নিমার চাঁদ যেন, ঝলসানো এক রুটি।
ইচ্ছে হয়-
চাঁদটাকে গোগ্রাসে গিলে খাই।
তারপর যুদ্ধ করি- দারিদ্রতার সাথে,
অভাবের সাথে, নিয়তির সাথে।
যখন খাবার আসে-আমার থালাতে’
বড় হা করে যতটুকু পারি,
মুখে পুরতে থাকি।
তখন, গেলার কথাও ভাবিনা।
হয়তো অভাবে, না হয় স্বভাবে।
হাত-পা নেই, শুধু আছে-
দন্ডের ন্যায় কঙ্কালসার এ দেহ,
ওভার-ব্রিজের উপর পরে থাকি,-
ভিক্ষার আশায়।
রোদে পুড়ি, বৃষ্টিতে ভিজি।
আসলে, রোদ-বৃষ্টি, সুখ-দূঃখ,
কিংবা হাসি-কান্নার অনুভূতি
ভোঁতা হয়ে গেছে আমার কাছে।
এভাবেই মোরা বেঁচে আছি।
যদিও এ বাঁচা মানে-
শুধু, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের বিনিময়।
সিনেমা হলের সামনে আমার আনাগোনা,
খদ্দের পেলে উল্লসিত হই,
দরকষাকষি করি-নিজ চরিত্রের।
তারপর বিলিয়ে দেই সবকিছু-
অকাতরে, নির্দ্ধিধায়, নিঃসঙ্কোচে।
কারণ, লজ্জা কিংবা সংকোচতা,
আমাদের বাঁচার শত্র“, অন্তরায়।
নিঃস্ব মোরা, শুধুতো বাঁচার জন্যই।
যদিও এ বাঁচা মানে-
শুধু, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের বিনিময়।
আমাদের নেই নির্দিষ্ট পেশা,
কখনও রিক্সাওয়ালা, কখনও টোকাই।
কখনও ভিক্ষুক, কুলি-মুজুর।
চুরি-ডাকাতিও করি মাঝে মাঝে।
স্বামীকে লাশের কাফন পরিয়ে ভিক্ষা করি,
লজ্জা হয়না-এভাবে বাঁচতেও।
তবুও শান্তনা, বেঁচেতো আছি।
যদিও এ বাঁচা মানে-
শুধু, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের বিনিময়।
রবীন্দ্রনাথের মত বলতে পারিনা,
’মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভূবনে।’
বলতে হয়,
’মরিতে চাহিনা এ মোহভরা ভূবনে।’
বাঁচতে চাই-খেয়ে না খেয়ে,
অনাহারে, অনিদ্রায়,
বঞ্চনায়, নির্যাতনেও।
যদিও এ বাঁচা মানে-
শুধু, নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের বিনিময়।
-----------------------
নাজনীন পায়েল/ ৯৬
No comments:
Post a Comment