It is now

Sunday, April 7, 2013

ইসলামে নেককার নারীর সম্মান ও মর্যাদা



লেখক ঃ খন্দকার নাজনীন সুলতানা
নারী, তুমি সৃষ্ঠির শ্রেষ্ঠ, অবনীর নীর, যেন গোলাপে গঠিত ভিতর ও বাহির। কত যতœ করে অপূর্ব সুন্দর রুপে অনুপম গুনাবলীতে আল্লাহ নারীকে সৃিষ্ট করেছেন পুরুষের সঙ্গীরুপে। নেককার নারী পরিবার, দেশ-জাতি তর্থ সমগ্র বিশ্বের জন্যই অমূল্য সম্পদ ।

একজন নারী, সে তার সমস্ত দায় দায়ীত্ব সম্পর্কে থাকবে সচেতন। নামাজে একনিষ্ঠ, আল্লাহর প্রতি ভক্তিতে অবনত, নিজের পবিত্রতা রক্ষার্থে সতর্ক, কাজে-কর্মে ইসলামের অনুসারী,মনে-প্রাণে ইসলামী নিয়ম-নীতিতে বিশ্বাসী, ধৈর্যশীলা, ন্যয়নিষ্ট, ঈমানদার, অনুগতা, সত্যবাদী, বিনীতা, দানশীলা, রোজা পালনকারিনী, যৌনাঙ্গ হেফাজতকারিনী আল্লাহর অধিক যিকিরকারিনী তাকেই বলা যায় নেককার নারী । আল-কোরআন ও হাদীসের বর্ননা অনুযায়ী পৃথিবীর সর্বযুগের ও সর্বকালের  সর্বোৎকৃষ্ট নেককার নারীরা হলেন, হযরত মরিয়ম (আঃ), হযরত খাদিজাতুল কুবরা (রাঃ), হযরত আছিয়া (আঃ), হযরত হজেরা (রাঃ), হযরত রহিমা (রাঃ), হাফসা বিনতে উমর ইবনুল খাতাব (রাঃ), ঊম্মুল মোমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা (রাঃ), হযরত যয়নব বিনতে জাহাশ (রাঃ), হযরত ফাতিমা যোহরা (রাঃ) প্রমুখ।

কন্যা, জায়া, জননী, নানা নামে ভূষিত ও বহুবিধ দায়িত্বে নিয়োজিত এক নারী । কন্যা, বোন স্ত্রী কিংবা মা, নারীর কোন দায়ীত্বের চেয়েই কোন দায়ীত্ব কম নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নারী যখন তার স্ব স্ব কাজ ও দায়িত্ব ঈমানের সাথে সূচারুরুপে পালন করতে পারবে, তখনই সে নারী হয়ে উঠবে একজন নেককার নারী, আদর্শ ও অনুকরনীয় ব্যক্তিত্ব ।
আল কোরআন ও হাদীসে নেককার অপরিসীম মর্যাদা ও সম্মানজনক পুরস্কারের কথা ঘোষিত হয়েছে । রাসূলে কারীম (সাঃ) এরশাদ করেন-কোন মুমিন ব্যক্তির জন্য পরহেজগারীর পর নেককার স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম কোন সম্পদ নেই । নেক স্ত্রীর লক্ষণ হলো, (১) যখন তাকে কোন নির্দেশ দেয়া হয়, তা সে পালন করে । (২) স্বামী যখন তার মুখের দিকে তাকায়, তখন সে স্বামীকে আনন্দ দান করে। (৩) যদি তাকে কোন শপথ দেয়া হয়, তবে সে তা পূরণ করে । (৪) স্বামী যদি কখনও বিদেশে চলে যায়, তবে স্বামীর অনুপস্থিতিতে সে নিজের সতীত্ব ও স্বামীর ধন সম্পদ রক্ষা করে।" (ইবনে মাজা)

ধার্মিকা নারীদের ফযিলত সম্পর্কে হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারীম (সাঃ) এরশাদ করেন-এ বিশ্বমন্ডলের পুরোটাই ভোগসম্ভার ও আনন্দ উল্লাসের সামগ্রী । তম্মধ্যে সর্বোত্তম সামগ্রী হল নেক ও সৎকর্মপরায়ণ নারী।" ( মুসলিম )
বিবাহের জন্য পাত্রী পছন্দের ক্ষেত্রেও নেককার ও দ্বীনদার নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে । এ প্রসঙ্গে হাদীসে পাই, নবী কারীম (সাঃ) এরশাদ করেন-স্ত্রী লোকের মধ্যে চারটি জিনিসের অনুসন্ধান করা হয় । সম্পদ, বংশ মর্যাদা, সৌন্দর্য ও ধর্মভীরুতা। হে উদ্দীষ্ট ব্যক্তি তুমি কেবলমাত্র ধর্মভীরু নারীকে বিবাহ কর। তোমার হাত    ধূলি-ধূসরিত হোক।" (বোখারী, মূসলিম)

নেককার নারী পরিবার, দেশ-জাতি তথা সমগ্র বিশ্বের জন্যই উপকারী । ধার্মিকা স্ত্রী তার স্বামীকে সর্বদা সৎ পরামর্শের মাধ্যমে সঠিক পথ বাতলে দিয়ে সকল বিপদ থেকে দূরে রাখেন। মহানবী (সাঃ) নেককার স্ত্রীদের  আল্লাহর অনুদান বলে অভিহিত করেছেন। হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্নিত একটি হাদীসে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন-আল্লাহ যাকে নেককার-দ্বীনদার স্ত্রী দান করেছেন, তাকে ,অর্ধেক দ্বীন দ্ধারা সাহায্য করেছেন। এখন তার কর্তব্য হলো সে 'তাক্বওয়া' ও 'খোদাভীরুতা' দ্ধারা বাকী দ্বীন অর্জন করুক।" (কানযুল উম্মাল ১৬:২৭৩)

নেককার স্ত্রী সর্বদাই স্বামীর ধর্ম-কর্মে সাহায্যকারিনী । ধার্মীকা স্ত্রী স্বামী ও 
তার পরিবারের জন্য আশীর্বাদস্বরুপ অপর দিকে বদকার স্ত্রী স্বামী, সন্তান ও তার পরিবারের জন্য অভিশাপ স্বরুপ । হযরত আবদুর রহমান ইবনে আবযী (রাঃ) হতে বর্নিত হয়েছে, নবী কারীম (সাঃ) এরশাদ করেছেন-নেককার মহিলা নেককার পুরুষের বিবাহ বন্ধন এমন, যেমন বাদশাহর মাথায় মূল্যবান পাথর খচিত তাজমুকুট। আর নেককার লোকের বিবাহ বন্ধনে বদকার মহিলা এমন যেমন বৃদ্ধ লোকের মাথায় ভারী বোঝা ।” (দুররুল মানসূর ২:১৫২)
পূন্যবান ও সচ্চরিত্রবতী নারীর স্বরূপ সম্পর্কে হযরত উমর (রাঃ) বলেছেন, "নারী জাতি তিন প্রকার-(১) ঐ নারী যে সচ্চরিত্রা, বাধ্যগত, প্রফুল্লামনা, কোমল হৃদয়, অধিক মুহাব্বতকারিনী, অধিক সন্তান প্রসবকারিনী, সর্বাবˉ’ায় স্বীয় স্বামী ও পরিবারের সকলের প্রতি দয়াময়ী । কিন্তু এমন মহিলা কম পাওয়া যায় (২) দ্বিতীয় ঐ নারী, যে পাত্রের মতো (যাতে জিনিস রাখা হয় এবং বের করা হয়।) অর্থাৎ অধিক সন্তান জন্ম দেয়ার উপযুক্ত নয়। (৩) ঐ মহিলা, যে ধোঁকাবাজ, দাগাবাজ, আল্লাহ যাকে চান, তার উপর এমন দুরাচার মহিলা চাপিয়ে দেন, আর যাকে চান, তার উপর থেকে হটিয়ে,দেন।"
(কানযুল উম্মাল ১৬:২৬৩)

দ্বীনদার নারীর ফজিলত অপরিসীম। তাবরানী শরীফে পাই, হযরত আবু 
উমামা (রাঃ) হতে বর্ণিত, মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেছেন-হে নারী জাতি! তোমাদের মধ্যে যারা নেককার, তারা নেককার পুরুষের আগে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদেরকে গোসল দিয়ে খুসবু মাখিয়ে নিজ নিজ স্বামীর নিকট অর্পণ করা হবে। তখন তারা লাল ও হলুদ বর্ণের বাহনের উপর উপবিষ্ট থাকবে। তাদের সাথে ছড়িয়ে থাকা মুক্তার মত কচি কচি শিশুরা পরিবেষ্টিত থাকবে।" (কানযুল উম্মাল ১৬:৪১২)

সৎ ও আদর্শ নারী এ পৃথিবীর আকর্ষণীয় নিয়ামতসমূহের অন্যতম। এ প্রসঙ্গে হযরত আনাস (রাঃ) বলেন, নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন-এ পৃথিবীর (সমগ্রী) থেকে আমার প্রিয় বানানো হয়েছে নারী ও সুগন্ধি এবং নামাযের মধ্যে আমার চোখের শীতলতা রাখা হয়েছে।” (নাসায়ী শরীফ)

নেককার নারীদের কিয়ামতের মাঠে মহান আল্লাহতা'য়ালা সম্মানিত করবেন। কিয়ামতের দিন ঘোর অন্ধকারে পুলসিরাত পার হবার সময় পূন্যবতী নারীরাও আল্লাহর অশেষ নেয়ামতের নূরের অধিকারী হবেন। এ প্রসঙ্গে আল-কোরআনে মহান আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন-স্বরনীয় সেদিন, যেদিন আপনি দেখবেন, ঈমানদার পুরুষ ও নারীদেরকে, যে তাদের সম্মুখে ও ডান পার্শে¦ তাদের নূর ছুটাছুটি করবে।(তাদেরকে) বলা হবে, আজ তোমাদের জন্য অনন্ত অসীম আনন্দময়  জান্নাতের সুসংবাদ, যার তলদেশে নহর প্রবাহিত। তাতে তারা চিরকাল থাকবে, এটাই মহাসাফল্য।” (সূরা হাদীদ, আয়াত নং১২)
পবিত্র ও নেক রমনী এই পৃথিবীতে বাহ্যিকভাবে হাজারো সমস্যায় র্জর্জরিত অবস্থায় থাকলেও মানসিক ভাবে চরম ও পরম প্রশান্তিতে জীবন অতিবাহিত করতে পারে আর পরকালে নেক নারীদের জন্য রয়েছে অনাদিকালের অফুরন্ত সুখ-শান্তি ও প্রশান্তি। এ প্রসঙ্গে আল- কোরআনে মহান আল্লাহতা'য়ালা ঘোষণা দিয়েছেন-যে ব্যক্তি নেক আমল করবে-চাই পুরুষ হোক বা নারী, যদি ঈমানদার হয় তাকে আমি দুনিয়াতে প্রশান্তির জিন্দেগী দান করব এবং পরকালে তাদের আমলের উত্তম প্রতিদানে তদেরকে  পুরস্কৃত করব।" (সূরা নাহল, আয়াত নং ৯৭)

সৎকর্মশীলা ও ঈমানদার নারীদের প্রসঙ্গে পবিত্র, কোরআনের সূরা নিসা ও সূরা ফাতহ-এ আল্লাহতা'য়ালা এরশাদ করেন-যে কেউ পুরুষ কিংবা নারী কোন সৎকর্ম করে এবং (আল্লাহতে) বিশ্বাসী হয়, তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রাপ্য তিল পরিমাণও নষ্ট করা হবে না।" (সূরা নিসা, আয়াত নং ১২৫)

তিনি (আল্লাহ) ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করান, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, সেথায় তারা চিরকাল থাকবে এবং আল্লাহ তদের পাপ মোচন করবেন। এটাই আল্লাহর কাছে তাদের প্রাপ্য মহাসাফল্য।" (সূরা আল ফাতহ, আয়াত নং ৫)

সৎকর্মশীল নেককার ও দ্বীনদার নারীদের ফজিলত সম্পর্কে হযরত উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত এক হাদীসে পাই, "নেক ও সৎকর্মপরায়ণ একজন মহিলা এক হাজার বে-আমল পুরুষ হতে ঊত্তম।" (আনীসুল ওয়ায়েমীন)

অপর এক হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয় পৃথিবীর নেকবখত নারীগণ জান্নাতের মাঝে সত্তর হাজার আনত নয়না রূপসী হুরদের চেয়েও উত্তম হবে।” (আত তাযকিরা: ৫৫৬)
ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে এ প্রসঙ্গে বর্ণিত এক হাদীস হতে পাই মহানবী (সাঃ) এরশাদ করেন-জান্নাতে প্রবেশের সময় সবচেয়ে অগ্রগামী ঐ সমস্ত মহিলাগণ হবেন, যারা দ্বীনের ব্যাপারে অগ্রগামীনী।" (মুসনাদে আহমদ ২:৬৬)

সতী নারী সর্বাবস্থায় অবশ্যই তার সতীত্ব রক্ষা করে চলবে। কারণ একজন নারীর জন্য সতীত্বের চেয়ে বড় সম্পদ আর নেই। আর হাজার প্রতিকূলতা  সত্ত্বেও সওয়াবের আশায় যে নারী সতীত্ব রক্ষা করে চলবে কেয়ামতের মাঠে সে শহীদদের অর্ন্তভূক্ত হবে। এ প্রসঙ্গে ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত এক হাদীসে পাই, নবী করীম (সাঃ) বলেছেন-'নিশ্চয় আল্লাহতা’আলা নারীদের উপর সতীত্ব সংরক্ষণবোধ ফরজ করেছেন। যেমন পুরুষদের উপর জেহাদ ফরজ করেছেন। অতঃপর তদের মধ্যে যে ঈমান ও সওয়াবের আশায় (সতীত্ব রক্ষা করত) ধৈর্য্য ধারণ করবে সে শহীদদের সওয়াব পাবে।” (কানযুল উম্মাল, ১৬:৪০৭)

“ইসলামে নেককার, ঈমানদার ও পবিত্র নারীদেরকে মহান আল্লাহ পুরুষের পাশাপাশি সকল প্রকার প্রাপ্য হকসমূহ সুনিশ্চিত করেছেন এবং উপযুক্ত সারিতে যথার্থ সম্মান ও মর্যাদার আসনে বসিয়েছেন । এ প্রসঙ্গে আল-কোরআনে বলা হয়েছে-"নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ ও মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী, অনুগত  পুরুষ ও অনুগতা নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীলা পুরুষ ও ধৈর্যশীলা নারী, বিনীত পুরুষ ও বিনীতা নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীলা নারী, রোযা-পালন কারী পুরুষ ও রোযা-পালন কারিনী নারী, যৌনাঙ্গ হিফাজতকারী পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হিফাজতকারিনী নারী, আল্লাহর অধিক যিকিরকারী পুরুষ ও আল্লাহর অধিক যিকিরকারিনী নারী তাদের জন্য প্রস্তত রেখেছেন মহান আল্লাহ ক্ষমা ও মহা পুরস্কার।” (আল আহযাব, আয়াত নং-৩৫)

ইসলাম পবিত্র নারীদের যতটুকু মর্যাদা ও সম্মান প্রদান করেছেন  অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদ তার কিঞ্চিতও প্রদান করতে পারেনি । অনেকক্ষেত্রে ইসলাম পুরুষদের চেয়েও নারীদের বেশী মর্যাদা ও অধিকার দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে একটি হাদীসে উল্লেখ করা যায়- “জনৈক সাহাবী রাসূলুল্লাহ (সাঃ)- এর কাছে আরজ করলেন ইয়া রাসূলুল্লাহ আমি কার সাথে সর্বাধিক সদ্ব্যবহার করব? রাসূলুল্লাহ (সাঃ) উত্তরে বললেন, তোমার মায়ের সাথে। অতঃপর জিজ্ঞেসা
করলেন তারপর কার সাথে ? নবী করীম (সাঃ) বললেন তোমার মায়ের সাথে। পুনরায় সাহাবী জিজ্ঞেস করেন তরপর কার সাথে? প্রিয় নবী (সাঃ) এবারও উত্তর দিলেন 'তোমার ময়ের সাথে'। এরপর ৪র্থ বার প্রশ্ন করলেন তারপর কার সাথে ? তখন প্রিয় নবী (সাঃ) উত্তর দিলেন 'তোমার পিতার সাথে' এবং এরপর অন্যান্য নিকট থেকে নিকটতম আত্মীয়ের সাথে।” (তিরমিজী ২:১১)

উক্ত হাদীস অধ্যয়নে বোঝা যায় যে, নবী করীম (সাঃ) পিতার তুলনায় মাকে তিনগুণ অধিক মর্যাদার অধিকারিনী বলে ঘোষনা করেছেন। রাসূলে আকরাম (সাঃ) অন্যত্র এরশাদ করেন-"নেককার স্ত্রী, যে স্ত্রী ঈমানে সাহায্যকারী সে একজন মুসলমানের জন্য পরম সম্পদ।"  (তিরমিযী)

নেক নারীদের মর্যাদা সম্পর্কে নবী করীম (সাঃ) আরো এরশাদ করেন- "নেককার স্ত্রী, উৎকৃষ্ট বাসস্থান এবং ভাল যানবাহন লাভ করা মানুষের সৌভাগ্য। আর দুশ্চরিত্রা স্ত্রী, মন্দ বাসস্থান ও খারাপ যানবাহন লাভ করা মানুষের দুর্ভাগ্য।"
ধামীর্কা, নেক ও সৎ নারীদের পরকালীন সম্মান সম্পর্কে উম্মুল মোমিনীন হযরত উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত অপর হাদীস হতে পাই, তিনি বলেন-"আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ ! দুনিয়ার (দ্বীনদার) নারীগণ কি আনতনয়না হুরদের চেয়ে উত্তম ? নবীজী (সাঃ) এরশাদ করেন, দুনিয়ার (দ্বীনদার) নারীগণ সুন্দরী হুরদের চেয়েও উত্তম। যেমন কাপড়ের উপরের পিঠ ভিতরের পিঠ থেকে উত্তম।"

অর্থাৎ ইহকাল ও পরকাল সকল সময়েই নেককার নারীর জন্য রয়েছে আল্লাহর সুদৃষ্টি, খাস রহমত ও নেয়ামতে ভরা অফুরন্ত পুরষ্কার। তাই আসুন মা-বোন কন্যা ও স্ত্রী সকল নারীরা আমরা সবাই সত্য- মিথ্যার তফাৎ বুঝে, সঠিক আদর্শে পথ চলতে শিখি। ইসলামী ন্যায়-নীতি আদর্শ অনুকরণ ও অনুসরণ করে হয়ে যাই - কোরআনে বর্ণিত জান্নাতী রমনীদের ন্যয় দ্বীনদার ও নেককার বান্দা। দ্রুত নিজেকে গড়ে তুলি অনুকরণীয় আদর্শ ব্যক্তিত্বরুপে।

আমরা নারীরা কেবল নারী হয়েই পথ চলবো। কোরআন ও হাদীসে বণির্ত নারীর কর্তব্য ও দায়-দায়ীত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠবো । সম-অধিকার নয়, আমাদের প্রয়োজন আল-কোরআন ও হাদীসে বর্ণিত নারীর অধিকারসমূহের যথার্থ ও সঠিক বাস্তবায়ন। আমাদের সকল স্বপ্ন সার্থক হোক। পথ-চলা হোক সুন্দর। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমীন।

প্রকাশঃ দৈনিক ইনকিলাব, (ইসলামী জীবন), ৮ ও ১০ নভেম্বর, ২০০৯।

লেখক ঃ খন্দকার নাজনীন সুলতানা

1 comment:

  1. এরকম নেককার নারী কি এই যুগে আছে? নারীদের আচার আচরণ চরম অশ্লীলতার পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। আর নারীরা কেন বাস্তববাদী হতে পারে না? সব সময় রঙ্গিন একটা দুনিয়ার থাকার চিন্তা করে। হিন্দি ছবি আর হিন্দি সিরিয়াল নারীদের অশ্লীল হতে একটা বড় ভুমিকা রাখছে।

    ReplyDelete